সর্বশেষ আপডেট : ৪ মিনিট ৪০ সেকেন্ড আগে
রবিবার, ৫ মে ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ২২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

সিলেটে বেড়েছে সিমকার্ড জালিয়াতি

সিমকার্ড একজনের নামে। কিন্তু যার নামে সিমকার্ডটি নিবন্ধিত (রেজিস্ট্রার্ড), তিনি কিছুই জানেন না। ওই সিম ব্যবহার করছে আরেকজন। শুধু যে ব্যবহারই করছে, তা নয়। ওই মোবাইল সিম দিয়ে চলছে নানা ধরনের অ’প’রাধকর্ম। সিমকার্ড জালিয়াতির এমনই একটি ভ’য়ংকর চক্রের সন্ধান পেয়েছে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রা’ইমের (সিটিটিসি) সাইবার ক্রা’ইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ। ইতোমধ্যে সিলেট থেকে গ্রে’প্তার করা হয়েছে তিনজনকে।

সাইবার ক্রা’ইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের কর্মক’র্তারা বলছেন, সিম নিবন্ধনের নামে সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় খুচরা ও গ্রাউন্ড প্রমোটররা ফাঁদ পেতে বসে আছে। কেউ যখন এদের কাছে সিম কিনতে যান, তখন কৌশলে ওই ব্যক্তির নামে একাধিক সিম নিবন্ধন (রেজিস্ট্রেশন) করে রাখে ওই খুচরো ও গ্রাউন্ড প্রমোটররা। কিন্তু যিনি একটি সিম কিনলেন, তার নামে যে একাধিক সিম রেজিস্ট্রেশন হয়ে যাচ্ছে, এর কিছুই তিনি টের পান না।

সংশ্লিষ্টরা জানান, একজন ব্যক্তি সিম কিনতে গেলে জালিয়াতচক্র কৌশলে তার ফিঙ্গারপ্রিন্ট (আঙুলের ছাপ) একাধিকবার গ্রহণ করে। প্রথম দফায় ফিঙ্গারপ্রিন্ট দেওয়ার পর এরা ‘নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সার্ভা’রের সাথে মেলেনি’ এ জাতীয় বানোয়াট কথা বলে। সহ’জ বিশ্বা’সে ক্রেতা তখন একাধিকবার ফিঙ্গারপ্রিন্ট প্রদান করেন। মূলত এসব ফিঙ্গারপ্রিন্ট একাধিক সিম রেজিস্ট্রেশনে ব্যবহার করে জালিয়াতচক্র। ক্রেতার দেওয়া জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) ফটোকপি দিয়ে তারা একাধিক সিম রেজিস্ট্রেশন করে রাখে। পরে প্রতারকচক্র বা অ’প’রাধীদের কাছে উচ্চ’মূল্যে বিক্রি করা হয় সেসব সিম।

এমন ভ’য়ংকর জালিয়াতির কারণে অনেক সময়ই নিরীহ মানুষ হয়’রানিতে পড়ছেন। কেননা, অন্যের নামে নিবন্ধনকৃত সিম দিয়ে প্রতারণা, হু’মকি, মোবাইল ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যবহার করে অর্থ পাচারের মতো অ’প’রাধও ঘটছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ত’দন্তের প্রাথমিক পর্যায়ে যার নামে সিম রেজিস্ট্রেশন করা, তাকে ধরছে। পরবর্তীতে অবশ্য সিম জালিয়াতির ঘটনা বেরিয়ে এলে ছাড়া পান নিরীহ ব্যক্তিরা।

জানা গেছে, গেল মাসের মাঝামাঝি সময়ে সাইবার ক্রা’ইম বিভাগের ‘ই-ফ্রড টিম’ মোবাইল ব্যাংকিং প্রতারণাচক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রে’প্তার করে। এ ঘটনার ত’দন্তে বেরিয়ে আসে প্রতারকচক্র অন্যের নামে নিবন্ধিত সিম ব্যবহার করে মোবাইল ব্যাংকিং প্রতারণা করে আসছে। পরে সিলেট এবং ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অ’ভিযান চালিয়ে শাহাদাত শিকদার, জুয়েল হাওলাদার, হিমন আহমেদ, রুবেল আহমেদ ও অ’পু চন্দ্র দাসকে গ্রে’প্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ব্যক্তির নামে নিবন্ধিত একাধিক মোবাইল অ’পারেটরের ৫০৪টি সক্রিয় সিম জ’ব্দ করা হয়।

এ প্রসঙ্গে সাইবার ক্রা’ইম বিভাগের ই-ফ্রড টিমের লিডার সহকারী কমিশনার সুরঞ্জনা সাহা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘প্রথমে সিলেটে অ’ভিযান চালিয়ে হিমন আহমেদ, রুবেল আহমেদ ও অ’পু চন্দ্র দাসকে গ্রে’প্তার করা হয়। এদের পেশা খুচরা সিম বিক্রি করা। কেউ সিম কিনতে গেলে মূলত এরাই কৌশলে এক ব্যক্তির নামে একটি সিমের জায়গায় একাধিক সিমের নিবন্ধন রেখে দেয়। এরপর এসব সিম তারা বেশি দামে প্রতারকদের হাতে তুলে দেয়।’

তিনি বলেন, ‘ওই তিনজনের তথ্যানুযায়ী শাহাদাত শিকদার ও জুয়েল হাওলাদারকে গ্রে’প্তার করা হয়। এরা ভু’য়া নিবন্ধিত সিম ব্যবহার করে মোবাইল ব্যাংকিং প্রতারণা করে আসছিল। এ চক্রটি ফরিদপুর জে’লার ভাঙার প্রতারক চক্র।’

সুরঞ্জনা সাহা জানান, অন্যের নামে নিবন্ধিত সিম বিক্রেতা এবং এগুলো ব্যবহারকারীদের সমন্বয়ে একটা সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। তারা যে গ্রুপকে ধরেছেন, তাদের মধ্যে প্রথম গ্রুপটা সিলেট থেকে সিম নিবন্ধন করিয়ে ফরিদপুরের ভাঙা এলাকাকেন্দ্রিক প্রতারকচক্রের কাছে বিক্রি করে আসছিল।

সিটিটিসির সাইবার ক্রা’ইম বিভাগের ডিজিটাল ফরেনসিক অ্যান্ড ই-ফ্রড টিমের অ’তিরিক্ত উপকমিশনার মো. আহসান হাবিব সংবাদমাধ্যমকে বলেন, একজন ব্যক্তি যখন সিম তুলতে গিয়ে ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিচ্ছেন, তখন অনেক সময় বিক্রেতা বলে থাকে, ছাপটি নেওয়া সম্ভব হয়নি বা ভালো’ভাবে হয়নি। তখন আবারও ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেওয়া হয়। আসলে এই কৌশলে সিম বিক্রেতা একজন ব্যক্তির কাছ থেকে দুই দফায় ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিয়ে রেখে দিল। ক্রেতাকে একটি সিম দিলেও বিক্রেতা পরে আরেকটি সিম তুলে রেখে দেয়। সে ক্ষেত্রে বিক্রেতা যে জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি দিয়েছিলেন, সেটির অন্য একটি কপি করে পরের সিমে তথ্য যু’ক্ত করা হয়। এভাবে ফিঙ্গারপ্রিন্টের ফাঁদ পেতে ক্রেতার অজান্তে বা অ’জ্ঞাতেই দ্বিতীয় সিমটি তুলে দেওয়া হচ্ছে অ’প’রাধী বা প্রতারকদের হাতে।

এই কর্মক’র্তা জানন, সিলেট অঞ্চলে চা-বাগানের শ্রমিকদের বেতন দেওয়ার জন্য সিমকার্ড এবং মোবাইল ব্যাংকিংয়ের অ্যাকাউন্ট দরকার হয়। হিমন আহমেদ, রুবেল আহমেদ ও অ’পু চন্দ্র দাসের চক্রটি এই সুযোগ কাজে লাগিয়েছে। এরা চা শ্রমিকদের অ’জ্ঞাতসারে তাদের নামে একাধিক সিম নিবন্ধন করে নেয়। তাদের কাছ থেকে উ’দ্ধার করা সক্রিয় ৫০৪টি সিমের বিষয়ে বিস্তারিত ত’দন্ত চলমান।

এই চক্রটি গেল সাত-আট মাসে প্রায় এক হাজার সিমকার্ড ভু’য়া নিবন্ধন করিয়ে প্রতারকদের কাছে বিক্রি করেছে বলে ত’দন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

এ বিভাগের অন্যান্য খবর

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি: মকিস মনসুর আহমদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম, নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ৯/আই, ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
ফোন: ০৮২১-৭২৬৫২৭, মোবাইল: ০১৭১৭৬৮১২১৪
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: